করোনা ভাইরাস ও সর্বপ্রকার মহামারী থেকে বাচার দোয়া।

اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَ الْجُنُوْنِ وَ الْجُذَامِ وَمِنْ سَىِّءِ الْاَسْقَامِ

উচ্চরণ:  আল্লাহুমা ইননী আঊজুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুনুনি ওয়াল জুযামি ওয়ামিন সাইয়্যেইল আসক্কাম।

অর্থ: হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট ধবল, উন্মান, কুষ্টরোগ এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

করোনা ভাইরাসের আর একটি নাম 2019-এনসিওভি। এটি এক ধরনের করোনা ভাইরাস। ভাইরাসটির অনেক রকম প্রজাতি রয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র সাতটি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভাইরাসটি হয়ত মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতোমধ্যে ‘মিউটেট করছে’ অথ্যাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে। ফলে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন,  এ ভাইরাস একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে ছড়াতে পারে। 

করোনা ভাইরাসের লক্ষণ কী?
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, জ্বর এবং কাশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে 1থেকে 14 দিন সময় লাগে। প্রথম লক্ষন হচ্ছে জ্বর। তারপর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং তখনই কোনও কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

কীভাবে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস?
মধ্য চীনের উহান শহর থেকে এই রোগের সূচনা। 31 ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীনের কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এর পর 11 জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয় এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
তবে ঠিক কীভাবে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেনি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সম্ভবত কোন প্রাণী এর উৎস ছিল। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোন মানুষের দেহে ঢুকেছে ্ এবং তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে। এর আগে সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রথমে বাদুড় এবং পরে গন্ধগোকুল থেকে মানুষের দেহে ঢোকার নজির রয়েছে। আর মার্স ভাইরাস ছড়িয়েছিল উট থেকে। করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে উহান শহরে সামুদ্রিক একটি খাবারের কথা বলা হচ্ছে। শহরটির একটি বাজারে গিয়েছিল এমন এক ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই বাজারটিতে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বেচাকেনা হতো কিছু সামুদ্রিক প্রাণী যেমন- বেলুগা জাতীয় তিমি করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে। তবে উহনের ওই বাজারে মুরগি, বাদুড়, খরগোশ এবং সাপ বিক্রি হতো।

এর চিকৎসা কী?
ভাইরাসটির নতুন হওয়াতে এখনও এর কোনও টিকা বা প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি। এমনকি এমন কোনও চিকিৎসাও নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে মানুষকে নিয়মিত হাত ভালোভাবে ধোয়া নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা এবং ঠান্ডা ও ফ্ল আক্রান্ত মানুষ থেকে দুরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এশিয়ার বহু অংশের মানুষ সার্জিক্যাল মুখোশ পরা শুরু করেছে।
আপাতত প্রতিকার হিসাবে এ ভাইরাস বহনকারীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে বলেছেন বিজ্ঞানীরা। ডাক্তারদের পরামর্শ, বারবার হাত ধোয়া, হাত দিয় নাক-মুখ স্পর্শ না করা ও ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরা।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. গ্যাব্রিয়েল লিউ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এ নির্দেশনয় বলছেন, হাত সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে। হাত দিয়ে নাক বা মুখ ঘষবেন না, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরতে হব। তিনি বলেন, আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মুখোশ পরুন, আর নিজে অসুস্থ না হলেও অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মুখোশ পরুন।
Previous Post Next Post