আমাদের দৈনন্দিন জীবনে লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN-ই ব্যবহার করে থাকি। ছােট-মাঝারি অফিস- আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে এ নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য থাকে ডিভাইসসমূহের মধ্যে পরস্পরের  তথ্য এবং রিসাের্স শেয়ার করা। ছােট- মাঝারি অফিসে LAN তৈরি করে প্রিন্টার, মডেম, স্ক্যানার, ইত্যাদি ডিভাইসের জন্য সাশ্রয় করা যেতে পারে।
কম্পিউটার ও অন্যান্য নেটওয়ার্ক ডিভাইসকে সংযুক্ত করার জন্য লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়। যাতে ডিভাইসগুলাে একটি আরেকটির রিসাের্স শেয়ার করতে পারে। ল্যানে এসব ডিভাইসকে যুক্ত করা হয় RJ45 ক্যাবলের মাধ্যমে। এখানে ব্যবহৃত ক্যাবলের সর্বোচ্চ অতিক্রমযােগ্য দূরত্ব ও অন্যান্য ৬ কারণে LAN একই বিল্ডিঙের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে।

কোনাে কোম্পানি বা অফিসের আকারের ওপর নির্ভর করে একাধিক LAN থাকতে পারে। যেমন বড় একটি কোম্পানি যার প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে প্রায় শ'খানেক লােক কাজ করে সেখানে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের জন্য একটি করে LAN থাকতে পারে অথবা প্রতিটি ফ্লোরে ভিন্ন ভিন্ন LAN থাকতে পারে। যদি এসব ল্যানকে সংযোগ করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে রাউটার (Router) কিংবা ব্রিজ (Bridge) নামের ডিবাইসের মাধ্যমে সংযোগ করা হয়।

এখানে কাপউটারসমূহকে ক্যাবলে যুক্ত করার জন্য দরকার হবে আরেকটি নেটওয়াক ডিভাইস ইন্টারফেস কার্ড বা LAN কার্ড। একে নেটওয়ার্ক এডাপ্টারও বলা হয়। রে ভিন্ন ভিন্ন LAN থাকতে পারে। যদি এসব হবে আরেকটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস নেটওয়ার্ক

লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে:
  • এসব নেটওয়ার্ক ছােট এলাকায়, যেমন একই বিল্ডিঙের মধ্যে, ব্যবহৃত হয়। 
  • এসব নেটওয়ার্কে উচ্চগতি, সাধারনত ১০ এমবিপিএস, পাওয়া যায়।
  • এর মাধ্যমে অনেক ডিভাইসে একসেস পাওয়া যায়। 
  • এ ধরনের নেটওয়ার্কে ল্যানের উপযােগী বিশেষ ডিভাইস যেমন রিপিটার, হাব, নেটওয়ার্ক  ইন্টাফেস কার্ড ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।


মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক 

মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক বা MAN একাধিক লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN এর সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এক্ষেত্রে ল্যানসমূহ থাকে একই শহরে। এ ধরনের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বেশ উচ্চগতিতে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক তাদের তথ্য শেয়ার করতে পারে। বিভিন্ন সরকারি অফিস এর প্রধান ব্যবহারকারী।
যেমন ধরা যাক ঢাকা শহরের প্রতিটি পুলিশ স্টেশনের নেটওয়ার্ককে নিয়ে গড়ে তােলা হলাে একটি নেটওয়ার্ক। তাহলে এটি হবে মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক বা MAN। ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক থেকে এর পার্থক্য হলাে এই যে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্কে গতি কম থাকে, কিন্তু মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্কে আমরা বেশ উচ্চগতি পেতে পারি। এটি বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন অফিসকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, এবং ৫০-৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ডিভাইস সরাসরি নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত, কিন্তু মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্কে প্রতিটি সাইট যুক্ত থাকে নেটওয়ার্কে। এক্ষেত্রে সাধারণত টেলিফোন কোম্পানির ইনস্টলকৃত ক্যাবল ব্যবহার করা হয় অথবা নিজে নতুন ক্যাবল ইনস্টল করার প্রয়োজন পড়ে। 

মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্কের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলাে: 
  1. মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্কে যুক্ত বিভিন্ন সাইট একই শহরে অথবা এর আশপাশ নিয়ে বিস্তৃত থাকে।
  2. মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্কে মাধ্যমে মেগাবিট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস), এমনকি কোনাে  কোনাে ক্ষেত্রে গিগাবিট পার সেকেন্ড (জিবিপিএস) পাওয়া যেতে পারে।
  3. এর মাধ্যমে একাধিক ল্যানের মাঝে একটি সংযােগ গড়ে ওঠে। 
  4. এ ধরনের নেটওয়ার্ক বিভিন্ন ডিভাইস, যেমন- রাউটার, টেলিফোন, এটিএম সুইচ এবং মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা, ব্যবহার করে থাকে।

ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক

ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বিস্তৃত ভৌগলিক এলাকায় অবস্থিত একাধিক LAN বা MAN-কে নিয়ে গড়ে ওঠে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক। এ ধরনের নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে টেলিফোন কোম্পানির ক্যাবল ব্যবহার করে। সে কারণে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক ধীরগতির হয়ে থাকে। বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠে বলে বিভিন্ন ল্যান ও ম্যানকে সংযুক্ত করার জন্য বিশেষ ডিভাইস ও টেকনােলজি ব্যবহার করা হয়। ল্যানের চেয়ে WAN গঠনের পরিকল্পনা সত্যই বেশ কঠিন। এটি ম্যানেজ করাও কঠিন। যদি গােটা বিশ্বজুড়ে কোনাে LAN গড়ার দরকার পড়ে তাহলে অনেকক্ষেত্রেই স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়।

বেশিরভাগ ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক ৫৬ কেবিপিএস থেকে ১.৫৪৪ এমবিপিএস গতিতে কাজ করে।  এতে সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ৪৫ এমবিপিএস। ওয়্যানকে ধীরগতির বলা হলেও ধীরে ধীরে এর পিরবর্তন হচ্ছে। 

ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্কের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলাে: 
  1. এসব নেটওয়ার্ক বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠতে পারে, এমনকি এর বিস্তৃতি গােটা বিশ্বজুড়ে হতে পারে।।
  2. এগুলি ল্যানের চেয়ে সাধারণত ধীর গতির হয়ে থাকে।
  3. ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক অবশ্যই কোন ইন্টানেটওয়াকিং ডিভাইস, যেমন- রাউটার, মডেম, ওয়ান সুইচ, ইত্যাদি ব্যবহার করতে হয়।

অধ্যায় ১. নেটওয়ার্ক পরিচিতি লােকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের বৈশিষ্ট্যগুলাে হলাে:
এসব নেটওয়ার্ক ছােট এলাকায়, যেমন একই বিল্ডিঙের মধ্যে, ব্যবহৃত হয়। > এসব নেটওয়ার্কে উচ্চগতি, সাধারনত ১০ এমবিপিএস, পাওয়া যায়। * এর মাধ্যমে অনেক ডিভাইসে একসেস পাওয়া যায়।।
এ ধরনের নেটওয়ার্কে ল্যানের উপযােগী বিশেষ ডিভাইস যেমন রিপিটার, হাব, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কাত ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
মেট্রোপলিটান এরিয়া নেটওয়ার্ক
Previous Post Next Post