Network Segment || নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট

আমরা একই নেটওয়ার্ক কয়েকটি ভাগে ভাগ করলে সেটিকে বলে থাকি নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট। বিভিন্ন কারণে নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট তৈরির প্রয়োজন পড়ে। এর প্রধান কারণ হলাে নেটওয়ার্ক ট্রাফিককে একটি গন্ডির মধ্যে রাখা। এই সেগমেন্ট তৈরির করার জন্য বেশ কিছু কানেক্টিং ডিভাইস ব্যবহৃত হয়।
Network Segment || নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট

কোন নেকওয়ার্কে কোন ডিভাইস যােগ করলে কিংবা নেটওয়ার্ককে বর্ধিত করলে নেটওয়ার্ককের পারফরমেন্স কমে যেতে পারে। যেমন কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে বাস টপােলজি গড়ে তোলা হলে বাসের দৈর্ঘ্য হতে পারে ১৮৫ মিটার। একে আরাে বর্ধিত করতে চাইলে এর সঙ্গে বিশেষ ডিভাইস ব্যবহার করতে হবে যা সিগন্যালকে বুস্ট বা এমপ্লিফাই করতে পারে। নেটওয়ার্কে বেশি করে ডিভাইস যোগ করার অথ্যই হলাে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক বাড়ানাে। নেটওয়ার্ক ট্রাফিক বাড়লে তাতে সংঘর্ষ বা কলিশন বাড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। সংঘর্ষ বাড়া মানে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে যাওয়া। এই সংঘর্ষ যাতে কম হয় সেজন্য আমরা বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশনের ট্রাফিককে কিছু নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে নিতে পারি। রাস্তায় জট লাগার হাত থেকে বাঁচার জন্য ট্রাফিক পুলিশ যেমন রিকশা ও যান্ত্রিক যানের রাস্তা ভিন্ন করে দেয়ার চেষ্টা করছেন তেমনি আমরা নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ওয়ার্কস্টেশনের ট্রাফিক কোনটি কোন পথে যেতে পারবে তা নির্ধারণ করে দিতে পারি; বিশেষ কিছু ডিভাইস ব্যবহার করে। কোন নেটওয়ার্ককে কয় ভাগে ভাগ করতে হবে কিংবা আদৌ বিভক্ত করার দরকার হবে কি না তা নির্ধারিত হয় দুটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে: ব্রডকাস্ট ডােমেইন (broadcast domain) এবং কলিশন ডােমেইন (collision domain)।

প্রথমেই আমরা জানব ব্রডকাস্ট ডােমেইন সম্পর্কে। ব্রডকাস্ট বলতে আমরা বুঝি এমন সিগন্যাল যা এ নেটওয়ার্কের সবকটি ডিভাইসের নিকট পৌছে। ব্রডকাস্টকে আমরা তুলনা করতে পারি চিৎকারের সাথে। ক্লাশের কোন ছাত্রের নাম রহিম তা জানার জন্য শিক্ষক মাঝে মাঝে চিৎকার করেন এবং সবাই সেই কথা শােনে কিন্তু উত্তর দেয় কেবল সেজনই যার নাম করিম। তেমনি নেটওয়ার্কে ব্রডকাস্টের ব্যবহারও হয়ে থাকে এধরনের কোনাে ক্লায়েন্টের নামের বিপরীতে তার আইপি এড্রেস বা লজিক্যাল এড্রেস পাওয়ার জন্য। কোনাে নেটওয়ার্কে একটি ব্রডকাস্ট যেসব ডিভাইসের নিকট পৌছে তাদেরকে নিয়ে যে গ্রুপ তাকেই বলা হয় ব্রডকাস্ট ডােমেইন। প্রায় সবধরনের নেটওয়ার্কেই কিছু কিছু কাজের জন্য ব্রডকাস্ট ব্যবহৃত হয়। ব্রডকাস্টের বড় অসুবিধা হলাে এই যে, এটি নেটওয়ার্কে অযথা ট্রাফিক তৈরি করে। যে মেসেজ একজনকে জানানাের দরকার সেটি অযথা অনেকের নিকট পৌছে। ব্রডকাস্ট ব্যবহৃত হয় এমন নেটওয়ার্কে নােডের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ব্রডকাস্টের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কোনাে ক্লাশের সকল ছাত্র একজন আরেকজনের নাম জানার জন্য যদি চিৎকার শুরু করে তাহলে অবস্থাটি কী দাঁড়াবে চিন্তা করুন। তেমনি যদি নেটওয়ার্কের সব স্টেশনই ব্রডকাস্ট শুরু করে তাহলে ব্রডকাস্ট ট্রাফিকেই পুরাে নেটওয়ার্ক প্লাবিত হবে। সেকারণে নেটওয়ার্ক ডিজাইনে ব্রডকাস্টকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়। এটি করা হয়ে থাকে বড় নেটওয়ার্ককে বেশ কটি ছােট ছােট ব্রডকাস্ট ডােমেইনে বিভক্ত করে।

নেটওয়ার্ক সেগমেন্ট করার জন্য আরেকটি নিয়ামক হলাে কলিশন ডােমেইন। আমরা জানি একই সময়ে দুটি ডিভাইস একই মিডিয়ার মাধ্যমে সিগন্যাল ট্রান্সমিট করতে চাইলে দুই সিগন্যালে সংঘর্ষ বা কলিশন ঘটে। কোনাে নেটওয়ার্কে কলিশন ঘটলে ওই নেটওয়ার্কের সকল ডিভাইস সেই কলিশনের অস্তিত্ত্ব টের পায় এবং তারা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনাে সিগন্যাল না পাঠিয়ে। কলিশনের কারণে এভাবে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স কমে যায়। একটি কলিশন ঘটলে যেসব ডিভাইস সেই কলিশনের অস্তিত্ত্ব টের পায়। তাদের নিয়ে গড়ে উঠে একটি কলিশন ডােমেইন। সাধারণত ইথারনেট নেটওয়ার্কে ব্রডকাস্ট ডােমেইন এবং কলিশন ডােমেইন একই হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু নেটওয়ার্ক ডিভাইস, যেমন ব্রিজ, সুইচ, ইত্যাদি ব্যবহার করে কলিশন ডােমেইন ও ব্রডকাস্ট ডােমেইন ভিন্ন করে দেয়া যায়। একটি নেটওয়ার্ককে দু’ভাবে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে:

  • একই নেটওয়ার্কের মধ্যে নূতন ডিভাইস বা নােড যােগ করে তাকে বর্ধিত করা। একে বলা হয় নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি।
  • এক নেটওয়ার্কের সাথে অন্য নেটওয়ার্ক যুক্ত করা। একে বলা হয় ইন্টারনেটওয়ার্কিং বা ইন্টারনেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি।


Post a Comment

Previous Post Next Post