Network Bridge | What is Bridge in Networking | নেটওয়ার্ক ব্রিজ কি? 

ব্রিজ (Bridge) এমন একটি ডিভাইস যা দিয়ে দুটি নেটওয়ার্ক সেগমেন্টকে যুক্ত করা যায় । এটি হাবের মতােই, তবে কার্যপ্রণালী ভিন্ন। এই ডিভাইসটি কাজ করে থাকে OSI রেফারেন্স মডেলের ডাটালিঙ্ক লেয়ারে। এটি ডাটালিঙ্ক লেয়ারে কাজ করে বলে এটি নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের OSI এড্রেস নিয়ে কাজ করতে পারে। OSI এড্রেসের উপর ভিত্তি করে এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, নেটওয়ার্কের কোন সেগমেন্টে সেই ডাটা প্যাকেটকে পাঠাতে হবে। 

ব্রিজের চারটি প্রধান কাজ হলাে: 

  1. এটি প্রতিটি সেগমেন্টে বিভিন্ন ডিভাইসের হিসেব রাখার জন্য ব্রিজিং টেবিল তৈরি করে। এতে থাকে উভয় সেগমেন্টের বিভিন্ন ডিভাইসের MAC এড্রেস।
  2. কোনাে ডাটা প্যাকেটের MAC এড্রেস দেখে এটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, এই প্যাকেটটিকে অন্য সেগমেন্টে পাঠানাের দরকার আছে কি না। ওই MAC এড্রেসযুক্ত হােস্টটি যদি একই সেগমেন্টে থাকে তাহলে ব্রিজ সেই প্যাকেটকে সেগমেন্ট অতিক্রম করতে দেবে না। এই ফিল্টারিঙের ফলে অযথা নেটওয়ার্ক ট্রাফিক তৈরি হয় না। 
  3. কোনাে ডাটা প্যাকেটের MAC এড্রেস পরীক্ষা করে যদি দেখে এটি অন্য অংশে আছে তাহলে ব্রিজ সেটিকে ওই অংশে পাঠিয়ে দেয়।
  4. এটি একটি নেটওয়ার্ককে কয়েকটি কলিশন ডােমেইনে বিভক্ত করে, ফলে নেটওয়ার্কে কলিশনের সংখ্যা হ্রাস পায়।
ব্রিজ এই পথ নির্বাচন এবং তাকে বিভিন্ন সেগমেন্টে পাঠানাের জন্য ব্যবহার করে স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল (STP)। 
স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল দুটি কাজ করে- প্রথমত, এটি প্রধান ব্রিজ বা রুটকে চিহ্নিত করে যেটি সকল ব্রিজিং সিদ্ধান্ত নেবে; দ্বিতীয়ত, এটি ব্রিজিং লুপ প্রতিহত করবে। 

নিচের চিত্রে একটি ব্রিজের ব্যবহার দেখানাে হলাে। এখানে সেগমেন্ট A থেকে একটি ডাটা প্যাকেট যদি 2AB-12 ম্যাক এড্রেসযুক্ত ওয়ার্কস্টেশনের উদ্দেশ্যে পাঠানাে হয় তাহলে সেই ডাটা প্যাকেটকে ব্রিজ অতিক্রম করতে দেবে না। কারণ ওই ওয়ার্কস্টেশনটি একই সেগমেন্টে আছে। আবার B সেগমেন্টের কোনাে কম্পিউটার যদি একটি ডাটা প্যাকেট 2BA-15 ম্যাক এড্রেসযুক্ত কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে পাঠায় তাহলে ব্রিজ সেটিকে অতিক্রম করে A সেগমেন্টে যেতে দেবে। কারণ ব্রিজ তার ব্রিজিং টেবিল থেকে জানতে পারছে যে ওই MAC এড্রেসযুক্ত কম্পিউটারটি A সেগমেন্টে রয়েছে।
Network Bridge | What is Bridge in Networking | নেটওয়ার্ক ব্রিজ কি?
Networking bridge

এখানে ব্রিজ কলিশন কমিয়ে দিলেও নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স ঠিক রাখার জন্য এর প্ল্যানিং সঠিকভাবে করা দরকার। আগের চিত্রে যদি সেগমেন্ট A থেকে সবসময় সেগমেন্ট B এর কোনাে কম্পিউটারের সাথে যােগাযােগ করতে হয় তাহলে সেই ট্রাফিককে ব্রিজ অতিক্রম করতে হবে। এভাবে প্রতিটি কম্পিউটারই যদি অন্য সেগমেন্টের সাথে সচরাচর যােগাযােগ করে থাকে তাহলে ব্রিজ অতিমাত্রায় ব্যস্ত হয়ে যাবে এবং ব্রিজ ব্যবহারের পুরাে সুবিধা আমরা পাবাে না। তাই ব্রিজ ব্যবহারের আগে নির্ধারণ করতে হবে কোন স্থানে ব্রিজ বসানাে দরকার। নেটওয়ার্কে যেসব কম্পিউটারের মধ্যে সব সময় যােগাযােগরে দরকার পড়ে সেগুলিকে নিয়ে একসাথে সেগমেন্ট তৈরি করা দরকার। যেমন আপনার অফিসের একই ডিপার্টমেন্টের কম্পিউটারগুলি নিজেদের মধ্যে বেশি যােগাযােগ করবে। তাই প্রতিটি ডিপার্টমেন্টকে নিয়ে ভিন্ন সেগমেন্ট তৈরি করতে পারেন। তারপর সেসব সেগমেন্টকে যােগ করা যেতে পারে ব্রিজ ব্যবহার করে। 

ব্রিজ দু’প্রকার-

  1. ট্রান্সপ্যারেন্ট ব্রিজ - কোথায় ডাটা পাঠাতে হবে তা নির্ধারণের জন্য একটি টেবিল মেমরিতে সংরক্ষণ করে।
  2. সাের্স রাউটিং ব্রিজ -এতে ট্রান্সমিশনের পুরাে পথ বলে দিতে হয় এবং কোনপথে প্যাকেট পাঠাতে হবে সে সিদ্ধান্ত ব্রিজ নিজে নিতে পারে না। আইবিএম টোকেন রিং নেটওয়ার্ক এধরনের ব্রিজ ব্যবহার করে।
মনে রাখা দরকার যে ব্রিজ দিয়ে দুটি ভিন্ন আর্কিটেকচারের, যেমন ইথারনেট ও টোকেন- রিং, নেটওয়ার্ককে যুক্ত করা যায় না। কারণ আর্কিটেকচারভেদে হার্ডঅয়্যার এড্রেসিং ভিন্ন হয়। ইথারনেটে যে MAC এড্রেস, টোকেন রিঙে সেটি ভিন্ন হওয়ায় এ দুই ধরনের প্যাকেট থেকে ব্রিজ MAC এড্রেস ব্যবহার করতে পারে না। এরকম ভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ককে যুক্ত করার জন্য বিশেষ ধরনের ব্রিজ ব্যবহার করা যেতে পারে যাকে বলা। হয় ট্রান্সলেশন ব্রিজ। 

কীভাবে ব্রিজ ব্যবহার করবেন তার একটি পুরনাে নিয়ম আছে যা ৮০-২০ নামে পরিচিত। এই নিয়মানুসারে ব্রিজ এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যাতে নেটওয়ার্কের ৮০% ট্রাফিককে ব্রিজ অতিক্রম করতে না হয়, কেবল। ২০% ট্রাফিক ব্রিজ অতিক্রম করে। ব্রিজ ব্যবহারের ফলে নেটওয়ার্কের পারফরম্যান্স যাতে অতিমাত্রায় কমে যায় সেজন্য এই নিয়ম। প্রতিটি ফ্রেমের সাথে যুক্ত MAC এড্রেস পরীক্ষা করে সেই ফ্রেমকে কোনদিকে পাঠাবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয় বলে ব্রিজ অতিক্রমের সময় কিছুটা সময় ব্যয় হয়, যদিও তা আমাদের নজরে পড়ে না। সব ট্রাফিক যদি ব্রিজ পার হতে চায় তাহলে সেই সামান্য বিলম্ব বেশ বড় আকার নিতে পারে। ব্রিজে এই বিলম্বকে বলা হয় ব্রিজ ল্যাটেন্সি (Bridge latency)। ব্রিজ ল্যাটেন্সি যাতে মারাত্মকভাব নেটওয়ার্কের গতিকে হ্রাস করতে না পারে সেজন্যই ৮০- ২০ নিয়ম।



Post a Comment

Previous Post Next Post